পলাশীর যুদ্ধ 1757

পলাশি যুদ্ধ 1757

নবাব আলীবর্দী খাঁর কোনো পুত্র সন্তান ছিল না । এই কারণে তিনি তার কনিষ্ঠা কন্যা আমিনা বেগম এর পুত্র 23 বছরের যুবক সিরাজউদ্দৌলা কে তার উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন । এতে সিরাজ এর নিকট আত্মীয়রা খুশি হতে পারেননি । আলিবর্দীর জ্যেষ্ঠা কন্যা ও ঢাকার ভূতপূর্ব শাসনকর্তার বিধবা পত্নী ঘসেটি বেগম এবং আলিবর্দীর মধ্যম কন্যার পুত্র পূর্ণিয়ার শাসনকর্তা সৌকত জঙ্গ সিরাজের বিরোধিতা করতে থাকেন । তারা সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেন এবং ঢাকার দেওয়ান রাজবল্লভ এই ষড়যন্ত্রে যোগদেন । ঘসেটি বেগমের প্রাসাদ মতিঝিল ছিল সিরাজ বিরোধী চক্রান্তের কেন্দ্রস্থল । সিরাজ ঘসেটি বেগমের ধনসম্পত্তি বলপূর্বক বাজেয়াপ্ত করেন এবং তাকে মুর্শিদাবাদ রাজপ্রাসাদে নজরবন্দি করে রাখেন । এরপর তিনি সৌকৎ জঙ্গের বিরুদ্ধে পূর্ণিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন কিন্তু ইতিমধ্যে ইংরেজ বণিকদের সঙ্গে তার সম্পর্ক এমন এক অবস্থায় পৌঁছে ছিল যে তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুর্শিদাবাদে ফিরে আসেন । 


নবাব সিরাজউদ দৌলার সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধের কারণ 

(1) সিরাজের সিংহাসন আহরণ এর সময় চিরাচরিত প্রথা উপেক্ষা করে ইংরেজরা সিরাজকে কোনো উপঢৌকন পাঠায়নি । এতে সিরাজ অপমানিত বোধ করেন । 

(2) সিরাজের কাছে সংবাদ পৌঁছায় যে ইংরেজরা সিরাজের বিরুদ্ধে ঘসেটি বেগম ও শওকত জংকে সাহায্য করার জন্য প্রতিশ্রুতি বদ্ধ । এতে সিরাজ ক্রুদ্ধ হন । 

(3) ঘসেটি বেগমের প্রিয় পাত্র ঢাকার দেওয়ান রাজবল্লভ এর বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপ অভিযোগ আনা হয় । সিরাজ তাকে মুর্শিদাবাদে এসে সকল হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় । রাজবল্লভী নির্দেশে তার পুত্র কৃষ্ণদাস প্রচুর ধনরত্নসহ ঢাকা থেকে কলকাতায় পালিয়ে যান এবং কলকাতার ইংরেজ গভর্নর ড্রেক তাকে আশ্রয় দেন ।  নবাবের বারংবার নির্দেশ সত্ত্বেও ইংরেজরা কৃষ্ণদাস কে নবাবের হাতে সমর্পণ করতে অস্বীকার করে । 

(4) দাক্ষিণাত্য যুদ্ধে অজুহাতে ফরাসি ও ইংরেজি উভয় পক্ষই বাংলাদেশ দুর্গ নির্মাণ শুরু করে । সিরাজ দুর্গ নির্মাণ বন্ধ করার নির্দেশ দিলে ফরাসিরা তা পালন করে কিন্তু ইংরেজরা তার বারংবার নির্দেশে কোনো কর্ণপাত করেনি এমনকি তার দূত নারায়ন দাস কেও তারা লাঞ্ছিত করে । এর ফলে নবাবের মর্যাদা যথেষ্ট ক্ষুন্ন হয় । 

(5) 1717 খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সম্রাট ফারুকশিয়ার ইংরেজ কোম্পানিকে বাংলাদেশের বাণিজ্য অধিকার এবং " দস্তক " বা ' ছাড়পত্র ' দান করেন । ' দস্তক ' কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছিল ব্যক্তিগতভাবে কোম্পানির কর্মচারীদের নয়, কিন্তু কোম্পানির কর্মচারীরা তাদের ব্যক্তিগত বাণিজ্য এই দস্তক ব্যবহার করত । এর ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হতো । সিরাজ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান কিন্তু কোম্পানি তার কথায় কর্ণপাত করতে রাজি ছিল না । 


সিরাজউদ্দৌলার কলকাতা দখল 

এই অবস্থায় সিরাজের পক্ষে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা ভিন্ন গত্যন্তর ছিলনা । উদ্যত ইংরেজদের সমুচিত শাস্তি দেবার উদ্দেশ্যে প্রথমেই তিনি তাদের কাশিমবাজার কুটি দখল করেন 4 ঠা জুন । এবং পরদিন কলকাতা অভিমুখে অগ্রসর হন । 1756 খ্রিস্টাব্দে এর 20 শেষ জুন ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ সহ কলকাতা নবাবের হস্তগত হয় । গ্রেট ও অধিকাংশ ইংরেজ কলকাতা থেকে পলায়ন করে ফলতায় আশ্রয় নেয় । 

সিরাজউদ্দৌলার অন্ধকূপ হত্যা 

বলা হয় যে এই সময় 20 শে জুন রাত্রিতে নবাবের হাতে বন্দী 146 জন ইংরেজ সৈন্যকে তার আদেশে নাকি 18 ফুট লম্বা এবং 14 ফুট 10 ইঞ্চি চওড়া একটি ক্ষুদ্র কক্ষে আটকে রাখা হয় । পরদিন সকালে দেখা যায় যে 123 জন সৈন্য মারা গেছে । এই ঘটনা " অন্ধকূপ হত্যা " বা ব্ল্যাকহোল ট্রাজেডি নামে পরিচিত । বলাবাহুল্য সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে এত ক্ষুদ্র প্রকোষ্টে এত জন সৈন্য কে বন্দি রাখা যায় না এবং এই কাহিনী সম্পূর্ণভাবে হলওয়েল নামক জনৈক পদস্থ ইংরেজ কর্মচারীর কল্পনাপ্রসুত । নবাবের চরিত্রহননের উদ্দেশ্যে তিনি এই কাহিনী প্রচার করেন । যাইহোক কলকাতা দখলের পর আলিবর্দীর নাম অনুসারে তিনি কলকাতার নাম রাখেন " আলিনগর " এবং মানিক চাঁদকে কলকাতা শাসনকর্তা নিযুক্ত করে মুর্শিদাবাদের ফিরে আসেন । 


ইংরেজদের কলকাতা পুনর্দখল, আলিনগরের সন্ধি ও চন্দননগর দখল 


কাশিমবাজার ও কলকাতার পতনে সংবাদ মাদ্রাজে পৌঁছালে কর্নেল ক্লাইভ ও অ্যাডমিরাল ওয়াটসনের নেতৃত্বে একটি নৌবহর কলকাতা পুনরুদ্ধারের জন্য যাত্রা করে এবং অতি সহজেই একরকম বিনা বাধায় কলকাতা তাদের হস্তগত হয় 2রা জানুয়ারি 1757 খ্রিস্টাব্দে । এই সংবাদে সিরাজ কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন । কিন্তু এ সময় আহমদ শাহ আবদালী পূর্ব ভারত আক্রমণ করতে পারেন এই আশঙ্কায় তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালান বিপদজনক বলে মনে করেন । এই কারণে কয়েক দিন যুদ্ধের পর তিনি ইংরেজদের সঙ্গে আলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষরিত করেন 9 ফেব্রুয়ারি 1757 খ্রিস্টাব্দে । সন্ধি শর্ত অনুসারে ইংরেজরা বিনাশুল্কে বাণিজ্য, দুর্গ নির্মাণ ও নিজ নামাঙ্কিত মুদ্রা প্রচলন অধিকার পায় । বলাবাহুল্য এই সন্ধির ফলে ইংরেজদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পায় এবং তাদের হাতে নবাবের পরাজয়ের তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করে । বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে সন্ধি স্বাক্ষরিত হলেও যথার্থ মিত্রতা স্থাপিত হয়নি । দাক্ষিণাত্য তখন কর্ণাটকের তৃতীয় যুদ্ধ চলছে । এই সুযোগে নবাবের প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে ক্লাইভ ফরাসি ঘাটে চন্দননগর দখল করেন 23শে মার্চ 1757 খ্রিস্টাব্দে । এইভাবে ক্লাইভ একদিকে যেমন প্রতিদ্বন্দ্বী ফরাসিদের ধ্বংস করেন তেমনি অপরদিকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে নবাব ও ফরাসি মৈত্রীর সম্ভাবনা দূর করেন । পরাজিত ফরাসিরা মুর্শিদাবাদে আশ্রয় গ্রহণ করে । এছাড়া এসময় দাক্ষিণাত্যের ফরাসির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিরাজের গোপন যোগাযোগ চলছিল । এতে ক্লাইভ আতঙ্কিত হন এবং তিনি উপলব্ধি করেন যে ইংরেজদের উপর নির্ভরশীল কোন ব্যক্তিকে মুর্শিদাবাদের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত ইংরেজদের স্বার্থ নিরাপদ নয় । 


সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র 

ইতিমধ্যে জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ, মীরজাফর, ইয়ার লতিফ প্রমুখ মুর্শিদাবাদের হিন্দু-মুসলিম বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি সিরাজের অপরিনামদর্শী ও উদ্ধত আচার আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে সিংহাসন থেকে অপসারিত করার চক্রান্ত শুরু করেন । তাদের আহবানে ক্লাইভ এই ষড়যন্ত্রে যোগ দেন । স্থির হয় সিরাজকে অপসারিত করে মীরজাফর সিংহাসনে বসবেন এবং এর বিনিময়ে ক্লাইব ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলাদেশ নানা সুযোগ-সুবিধা পাবে । 


পলাশীর যুদ্ধের প্রকৃত কারণ 

ইংরেজ ঐতিহাসিক হিল এর মতে পলাশীর যুদ্ধের জন্য সিরাজী দায়ী ছিলেন । তার মতে নবাবের " অহমিকা " ও লোভই যুদ্ধের জন্য দায়ী ছিল । তিনি বলেন যে নবাবের প্রকৃত লক্ষ্য ছিল কোম্পানির অর্থ লুণ্ঠন করা, দুর্গ নির্মাণ ও অন্যান্য বিষয়েকে  তিনি উপলক্ষ হিসাবে ব্যবহার করেন । অপরপক্ষে ঐতিহাসিক ব্রিজেন গুপ্ত বলেন যে, ঐশ্বর্য ক্রমবর্ধমান ক্ষমতার মোহে আচ্ছন্ন হয়ে ইংরেজ কোম্পানি সাম্রাজ্যবাদী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে পড়ে এবং এর ফলে পলাশীর যুদ্ধের সূচনা হয় । 


পলাশির যুদ্ধ 1757 খ্রিস্টাব্দ 23 শে জুন 

ষড়যন্তের প্রস্তুতি শেষ হলে ক্লাইভ নবাবের বিরুদ্ধে আলিনগরের সন্ধির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ আনেন এবং এক চরমপত্র পাঠিয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন । চরমপত্রের উত্তর আসার আগেই ক্লাইভ সসৈন্যে মুর্শিদাবাদ অভিমুখে যাত্রা করেন । 1757 খ্রিস্টাব্দের 23 শে জুন মুর্শিদাবাদের 23 মাইল দূরে পলাশীর প্রান্তরে দু'পক্ষে যুদ্ধ হয় । ইংরেজ পক্ষে ছিল 800 ইউরোপীয় ও 2200 স্বদেশীয় সেনা এবং অপরদিকে নবাবের পক্ষে ছিল 18000 অশ্বারোহী ও 50000 পদাতিক সৈন্য । মীরজাফর , রায়দুর্লভ , ইয়ার লতিফ প্রমুখ সেনাপতিরা যুদ্ধক্ষেত্রে পুতুলের মতো দন্ডায়মান থাকেন । বীর সেনাপতি মীরমদন ও মোহনলাল যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দেন । মীরজাফর এর চরম বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব বাহিনি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ।  সিরাজ পলায়ন করেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বন্দী করে মুর্শিদাবাদে আনা হয় এবং মীর জাফরের পুত্র মিরনের আদেশে তিনি নিহত হন 2 জুলাই 1757 খ্রিস্টাব্দে । 


পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল 

যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা ও যুদ্ধের ব্যাপকতা দিক থেকে বিচার করলে পলাশীর যুদ্ধ কে সামান্য খণ্ডযুদ্ধ ব্যতীত অপর কিছু বলা যায় না, কিন্তু ভারত ইতিহাসে এই যুদ্ধের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম । বাঙালি কবি নবীনচন্দ্র সেন পলাশীর যুদ্ধ কে ভারতে অন্ধকারময় রাতে সূচনা বলে আখ্যায়িত করেছেন । ঐতিহাসিক ডঃ বিধান চন্দ্রের  মতে পলাশীর যুদ্ধ বিশেষ ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ । এই যুদ্ধের ফলাফল বাংলায় এবং পরে সমগ্র ভারতে ব্রিটিশ আধিপত্যের পথ সুগম করে । এতে ব্রিটিশের মর্যাদা বহু পরিমাণে বৃদ্ধি পায় এবং এই একটি ধাক্কাতেই তারা ভারত সাম্রাজ্যের এক অতি শক্তিশালী দাবিদার রূপে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে । সমৃদ্ধ বাংলা প্রদেশের রাজস্বের টাকায় তারা একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করে নেয় । বাংলার কর্তৃত্ব লাভ ইঙ্গ-ফরাসি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মীমাংসা করে দেয় । 

(1) পলাশীর যুদ্ধের ফলে ইংরেজদের অনুগ্রহে মীরজাফর বাংলার মসনদে বসেন এবং তিনি ইংরেজদের হাতের পুতুলে পরিণত হন । প্রকৃতপক্ষে ইংরেজ কোম্পানি বাংলার কর্তায় পরিণত হয় এবং তারাই ছিল নবাবের সিংহাসনের পশ্চাতে প্রকৃতি শক্তি । পলাশীর যুদ্ধ ইংরেজদের পক্ষে ভারত জয়ের পথ সুগম করে । 

(2) যুদ্ধে জয়লাভের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য কোম্পানির একচেটিয়া আধিপত্য স্থাপিত হয়, তারা বিনা শুল্কে বাংলার বাণিজ্য করতে থাকে । এইভাবে অপরাপর ইউরোপীয় বণিক ও দেশীয় বণিকদের সর্বনাশের পথ উন্মুক্ত হয়। 

(3) বাংলার মসনদে বসে মীরজাফর ইংরেজ কোম্পানি ও ক্লাইভ কে প্রভূত অর্থ ও নানা উপঢৌকন দান করেন । এর ফলে বাংলার রাজকোষ শূন্য হয়ে যায় । এছাড়া কোম্পানি ও তার কর্মচারীরা নানাভাবে বাংলার আর্থিক সম্পদ শোষণ করতে থাকে এই ঘটনাকে " পলাশীর লুণ্ঠন (Plassey plunder ) " বলা হয় । ব্রিটিশ ঐতিহাসিক টমসন ও গ্যারাট এর মতে, বাংলার মানুষের শেষ রক্তবিন্দু শুষে না নেয়া পর্যন্ত ইংরেজরা তাদের শোষণ অব্যাহত রেখেছিল । 

(4) বাংলার অমিত ঐশ্বর্য ব্যবহার করে দক্ষিণ ভারতে ইংরেজরা ফরাসিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয় যুক্ত হয় । এই কারণে বলা হয় যে পলাশীর যুদ্ধ ভারতে ফরাসিদের ভাগ্য নির্ধারণ করে । 

(5) অনেকে বলেন যে এই যুদ্ধের ফলে বাংলায় ইংরেজ প্রভুত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত হয় । কিন্তু এই মত সঠিক নয় ,কারণ মীর জাফরের সঙ্গে ইংরেজদের সন্ধির শর্তাবলীতে এ ধরনের কোন কথা উল্লেখ নেই ।এছাড়া পরবর্তীকালে মীরকাসিম ইংরেজ শক্তিকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করেন । বাংলার সার্বভৌম শক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইংরেজদের আরো কয়েকটি যুদ্ধ করতে হয় । 

(6) স্যার যদুনাথ সরকারের মতে পলাশীর যুদ্ধের ফলে ভারতে মধ্যযুগের অবসান ঘটে ও আধুনিক যুগের সূচনা হয় । পাশ্চাত্য শিক্ষা ও ভাবধারার সংস্পর্শে এসে ভারত ইতিহাসে নবজাগরণের সূচনা হয় এবং এর ফলে ভারতের মৃতপ্রায় রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে নব দিগন্তের উন্মোচন ঘটে । 


পলাশী যুদ্ধের 1757 থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর 


(1) ইংরেজরা কিভাবে কলকাতা পুনর্দখল করে ? 

ANS:  মানিকচাঁদকে উৎকোচ দিয়ে । 

(2) রবার্ট ক্লাইভ কে ছিলেন ? 

ANS:  বাংলায় ইংরেজ সেনাপতি এবং পলাশী ষড়যন্ত্রের নেতা । 

(3) পলাশী যুদ্ধের পর কে নতুন নবাব হন ? 

ANS:  মীরজাফর 

(4) কখন বক্সারের যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয় ? 

ANS:  1764 খ্রিস্টাব্দের 22 অক্টোবর 

(5) মীরকাসিম কোথায় রাজধানী স্থানান্তরিত করেন ?

ANS:  মুঙ্গের 

(6) বক্সার যুদ্ধে ইংরেজ সেনাপতি কে ছিলেন ? 

ANS:  হেক্টর মনরো 

(7) দেওয়ানী কি ?

ANS:  ভূমি রাজস্ব আদায়ের অধিকার 

(8) ইংরেজরা কবে দেওয়ানি লাভ করে ? 

ANS:  1765 খ্রিস্টাব্দের 12 আগস্ট 

(9) কোন সন্ধির দ্বারা ইংরেজদের দেওয়ানি লাভ হয় ?

ANS:  এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি 

(10) এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি কবে স্বাক্ষরিত হয় ?

ANS:  1765 খ্রিস্টাব্দের 12 আগস্ট 

(11) কার কাছ থেকে ইংরেজরা দেওয়ানি লাভ করে ?

ANS:  পলাতক মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম এর কাছ থেকে 

(12) বন্দিবাসের যুদ্ধে উভয় পক্ষের সেনাপতি কারা ছিলেন ? 

ANS:  ফরাসি সেনাপতি লালি এবং ইংরেজ সেনাপতি সার আয়রকূট 

(13) দৈত্তশাসনের পরিণাম কী ছল ?

ANS:  ছিয়াত্তরের মন্বন্তর 

(14)  ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কবে হয়েছিল ?

ANS:  1176 বঙ্গাব্দ ( 1770 খ্রিঃ) ।

(15) ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পুঁজি কোথা থেকে জোগাড় হয়েছিল । 

ANS:  ভারত থেকে লুট করা সম্পদ থেকে । 

(16) অন্ধকূপ হত্যার কাহিনীকার কে ? 

ANS:  হলওয়েল 

(17) হলওয়েল অন্ধকূপ হত্যার জন্য কাকে দায়ী করেন ?

ANS:  নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কে 

(18) বাংলা শেষ স্বাধীন নবাব কে ?

ANS:  মীর কাসিম 

(19) কত সালে রেগুলেটিং অ্যাক্ট পাস হয় ?

ANS:  1773 খ্রিস্টাব্দে 

(20) পলাশীর যুদ্ধে সিরাজের দুজন বিশ্বস্ত সেনাপতির নাম লেখ ?

ANS:  মীর মদন ও মোহনলাল 

(21) কোন যুদ্ধে টিপু পরাস্ত ও নিহত হন ?

ANS:  চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ 1799 খ্রিস্টাব্দে 

(22) ওরঙ্গজেব এর মৃত্যুর পর কে মোগল সিংহাসনে বসেন ? 

ANS:  বাহাদুর শাহ 

(23) নাদির শাহের ভারত আক্রমণ কালে দিল্লির সম্রাট কে ছিলেন ?

ANS:  মোগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহ 

(24) স্বাধীনতার বৃক্ষ কে রোপণ করেন ?

ANS:  টিপু সুলতান 

(25) বাংলা স্বাধীন নবাবী কে প্রতিষ্ঠা করেন ? 

ANS:  মুর্শিদকুলি খাঁ 

(26) মাল জামিনী প্রথা কে প্রবর্তন করেন ?

ANS:  মুর্শিদকুলি খাঁ 

(27) বর্গী নেতা ভাস্কর পন্ডিত কার আমলে বাংলা আক্রমণ করেন ?

ANS:  নবাব আলীবর্দী আমলে 

(28) সিরাজের প্রধান সেনাপতি কে ছিলেন ?

ANS:  মীরজাফর 

(29) কবে পলাশীর যুদ্ধ হয়েছিল ?

ANS:  1757 সালের 23 শে জুন 

(30) কলকাতার নাম কে আলিনগর রেখেছিলেন ?

ANS:  সিরাজ-উদ-দৌলা 

(31) সিরাজের রাজধানী কোথায় ছিল ?

ANS:  মুর্শিদাবাদে 

(32) সিরাজ এর স্ত্রীর নাম কি ?

ANS:  লুৎফাউন্নিসা 

(33) সিরাজ কে কে হত্যা করেন ?

ANS:  মীর জাফরের পুত্র মিরনের আদেশে মেহেদী বেগ 

(34) মুর্শিদাবাদ থেকে কে মুঙ্গেরে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন ?

ANS:  মীর কাসিম 

(35) বক্সারের যুদ্ধ কখন হয় ?

ANS:  1764 খ্রিস্টাব্দে 22 শে অক্টোবর 

(36) মীর কাসিম কখন মারা যায় ?

ANS:  1777 খ্রিস্টাব্দে 

(37) ফারুকশিয়ারের দরবারে কোন ইংরেজ দূত এসেছিলেন এবং ইংরেজ কোম্পানির জন্য ফরমান লাভ করেন ?

ANS:  সুরম্যান 

(38) বক্সারের যুদ্ধে মীর কাসিমর দুই ফরাসি সেনাপতির নাম লেখ ? 

ANS:  সমরু ও মার্কার 

(39) কোন সন্ধির দ্বারা ভারতে ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সমাপ্তি ঘটে ?

ANS:  বন্দীবাসের যুদ্ধের (1760 খ্রিস্টাব্দে) 

(40) পন্ডিচেরির ফরাসি শাসনকর্তা কে ছিলেন ?

ANS:  ডুপ্লে 

(41) কোন শিখ গুরুর সময়ে অমৃতসরের সরোবর খনন করা হয়েছিল ?

ANS:  চতুর্থ শিখ গুরু রামদাস এর সময় 

(42) মাসন্দ কাদের বলা হয় ?

ANS:  গুরু অর্জুন কর্তৃক কর আদায়কারী গোষ্ঠীকে 

(43) নবম শিখ গুরু তেগ বাহাদুর এর প্রাণদণ্ডাদেশ কে দেন ?

ANS:  ঔরঙ্গজেব 

(44) খালসা দলের প্রবর্তক কে ?

ANS:  শেষ শিখ গুরু গোবিন্দ সিংহ 

(45) নানাসাহেব কে ছিলেন ?

ANS:  শেষ পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও এর দত্তক পুত্র 

(46) সব লাল হো জায়গা উক্তিটি কার ?

ANS:  রণজিৎ সিংহের 

(47) চিলিয়ান ওয়ালার যুদ্ধ ডালহৌসির শত্রুপক্ষ কারা ছিলেন ?

ANS:  শিখগন 

(48) রঞ্জিত সিংহ কে কে নেপোলিয়নের ক্ষুদ্র সংস্করণ বলে অভিহিত করেছেন ?

ANS:  ফরাসি পন্ডিত জ্যাঁকেমা 

(49) ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের সময় বাংলার গভর্নর কে ছিলেন ?

ANS:  লর্ড কার্টিয়ার