ভারতের পঞ্চায়েতী রাজ ব্যবস্থা

Ponchayeti raj

এটি একটি শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থা এডমিনিস্ট্রেটিভ স্ট্রাকচার প্রথম প্রবর্তিত হয় রাজস্থানে ১৯৫৯ সালে যে আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত পঞ্চায়েতিরাজ তা হল গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীয়করণ । মেঘালয়, লাক্ষাদ্বীপ , নাগাল্যান্ড , মিজোরাম এই চারটি রাজ্য এখনো পর্যন্ত পঞ্চায়েতি রাজ প্রবর্তিত হয়নি । 

ভারতের পঞ্চায়েত রাজ এটি ত্রিস্তর ব্যবস্থা, (থ্রি টায়ার সিস্টেম) একমাত্র ব্যতিক্রম দাদরা ও নগর হাভেলি যেখানে পঞ্চায়েতিরাজ একটি দ্বিস্তর ব্যবস্থা। Two tier সিস্টেম । পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যা ৩৪১ টি । 


পঞ্চায়েতীরাজ 

গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা । ভারতীয় সংবিধানের ৪০ নং অনুচ্ছেদে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গঠনের উল্লেখ ছিল। এই নির্দেশমূলক নীতি অনুযায়ী গ্রামীন পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গঠনের জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় । ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় উন্নয়ন পর্ষদ বলবন্ত রাই জি মেহতা কমিটি গঠন করে যার দায়িত্ব ছিল জনসাধারণের উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং জাতীয় বর্ধিত সেবার ভালো কাজের জন্য প্রস্তাব দেওয়া । এই কমিটি ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে তার রিপোর্টে যেসব সুপারিশ করে সেগুলি অনুমোদন পায় ১৯৫৮ সালে এবং উক্ত সুপারিশ গুলির ভিত্তিতে ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দের 2 অক্টোবর রাজস্থানে স্বাধীন ভারতের প্রথম পঞ্চায়েতি রাজের সূচনা হয় । 


ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার তিনটি স্তরে থাকে -  1) (গ্রামের স্তরের) গ্রাম পঞ্চায়েত, 2) (ব্লক স্তরে) পঞ্চায়েত সমিতি ও (জেলা স্তরে) জেলা পরিষদ ।

গ্রাম পঞ্চায়েত 

গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সংখ্যা 5 থেকে 30 জন হতে পারে সংরক্ষণের নিয়ম অনুযায়ী এই আসন গুলির মধ্যে কিছু আসন সংরক্ষিত থাকে তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায় এবং মহিলাদের জন্য । গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা জনসাধারণের প্রত্যক্ষ ঘটে নির্বাচিত হন । নির্বাচিত সদস্যগণ প্রথম সভায় নিজেদের মধ্য থেকে একজনকে সরপঞ্চ বা প্রধান এবং একজনকে উপসরপঞ্চ বা উপপ্রধান নির্বাচিত করেন । গ্রাম পঞ্চায়েত কে গ্রাম সভার কাছে তার কাজের জবাবদিহি করতে হয় । 

গ্রাম পঞ্চায়েত যে ধরনের উন্নয়নমূলক কাজে যুক্ত থাকে সেগুলি হল -  স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাস্তাঘাট নির্মাণ, টিউবওয়েল বা কূপ খনন, জল নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন, পুকুর খনন, রাস্তাঘাট আলোকিত করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, কৃষির উন্নয়ন , হস্ত ও কুটির শিল্পের প্রসার ।

              গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সমস্ত নির্বাচকদের নিয়ে গ্রাম সভা গঠিত হয় । গ্রাম সভা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজের উপর নজরদারি করে এবং পঞ্চায়েতের কাজকর্ম সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য নির্দেশিকা দেয় । গ্রাম পঞ্চায়েতের আয়ের উৎস হল গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন কর তবে এই করের পরিমাণ অতি সামান্য ফলে গ্রাম পঞ্চায়েত কে তার উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকারি অনুদানের উপর নির্ভর করতে হয় । 


পঞ্চায়েত সমিতি 

গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদের মধ্যবর্তী স্তর হল পঞ্চায়েত সমিতি পঞ্চায়েত সমিতি নির্বাচিত ও পদাধিকার বলে পথপ্রাপ্ত সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় । পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সদস্যগণ জনসাধারণ কর্তৃক প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হন। সংরক্ষণের নিয়ম অনুযায়ী পঞ্চায়েত সমিতির কিছু আসন সংরক্ষিত থাকে তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায় এবং মহিলাদের জন্য । পদাধিকার বলে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পদ পাপকরা হলেন - সংশ্লিষ্ট ব্লকের অন্তর্গত প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান , ব্লকের অন্তর্গত লোকসভা রাজ্যসভা ও বিধানসভার সদস্যগণ মন্ত্রীগণ ব্যতিরেকে এবং ব্লকের অন্তর্গত জেলা পরিষদের সদস্যগণ ( সভাপতি ও সহ-সভাধিপতি ব্যতিরেকে ) ।      

         পঞ্চায়েত সমিতির পালনীয় দায়িত্ব গুলির মধ্যে অন্যতম কৃষির উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসার, গ্রামীণ ঋণদান ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন , শিক্ষার প্রসার,  জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন,  রাস্তাঘাট নির্মাণ ইত্যাদি এবং পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত গ্রাম পঞ্চায়েত গুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন । এছাড়াও রাজ্য সরকার কোন দায়িত্ব আরোপ করলে তাও পালন করতে হয় পঞ্চায়েত সমিতিকে । 


জেলা পরিষদ

গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা বা পঞ্চায়েত ব্যবস্থার সর্বোচ্চ স্তর হল জেলা পরিষদ প্রতিটি জেলায় একটি করে জেলা পরিষদ থাকে জেলা পরিষদ নির্বাচিত সদস্য ও পদাধিকার বলে সদস্যপদ প্রাপ্ত সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় নির্বাচিত সদস্য গন সদস্য গন প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হন। সংরক্ষণের নিয়ম অনুযায়ী জেলা পরিষদের কিছু আসন সংরক্ষিত থাকে তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায় এবং মহিলাদের জন্য পদাধিকার বলে জেলা পরিষদের সদস্যপদ পাঠকরা হলেন জেলা থেকে নির্বাচিত লোকসভা রাজ্যসভা ও বিধানসভার সদস্যগণ মন্ত্রী ব্যক্তিদের কে এবং জেলার অন্তর্গত পঞ্চায়েত সমিতির। 

জেলা পরিষদের পালনীয় দায়িত্ব গুলির মধ্যে অন্যতম কৃষি গবাদি পশু পালন সংক্রান্ত উন্নয়ন শিল্পোন্নয়ন ও সমবায় গঠন গ্রামীন দ্বীনদান ব্যবস্থা শেষ ও জল সরবরাহ জনস্বাস্থ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শিক্ষার উন্নয়ন ও প্রসার এবং বিভিন্ন জনকল্যাণ প্রকল্পের রূপায়ণ।

এছাড়াও রাজ্য সরকার কোন দায়িত্ব অর্পণ করলে সেটাও পালন করতে হয় গ্রাম পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ সবকটি পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানের দাম পাঁচ বছর রাজ্য সরকার মনে করলে এই মেয়াদ এককালীন সমাজ বাড়াতে পারেন।